শিক্ষা

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সদা পরিবর্তনশীল এবং বিভিন্নরূপ শিক্ষা ব্যবস্থার সমন্বয়ে গঠিত। এই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রধানতঃ প্রাথমিক স্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তর এবং উচ্চশিক্ষা বা বিশ্ববিদ্যালয় স্তর - এই তিন স্তরবিশিষ্ট। সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো পরিচালিত হয় ৫ বছর মেয়াদি প্রাথমিক, ৫ বছর মেয়াদি মাধ্যমিক ও ২ বছর মেয়াদি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে। উচ্চশিক্ষা বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা ৩-৫ বছর মেয়াদি; যা সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ২৮টি পাবলিক ও ৫০টিরও বেশি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তত্ত্বাবধানে অধিভুক্ত কলেজের মাধ্যমে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা বা ইংরেজির মধ্যে যেকোনটিকে বেছে নিতে পারে।
উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলেজ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া রয়েছে মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল। এগুলো যথাক্রমে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড এবং বিদেশী শিক্ষা বোর্ডের তালিকাভুক্ত। মাধ্যমিক পরবর্তী পর্যায়ে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ স্কুল পরিচালনার জন্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই উন্নয়ন, অনুমোদন এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্ত্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ ব্যুরো অব এডুকেশনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিক্স (BANBEIS) গঠন করেছে, যা সকল পর্যায়ের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট তথ্য সংরক্ষণ করে থাকে। অত্যান্ত দঃখের বিষয় হলেও সত্য এদেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈষম্য বিদ্যমান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত কলেজগুলোতে একজন ছাত্র ১০০০০ টাকা খরচে উচ্চ শিক্ষা লাভ করতেছে আবার অন্যজন একই ডিগ্রী নিতে ১০০০০০০(এক লক্ষ) খরচ করছে। ফলে কৃষি প্রধান এদেশে অনেক ছাত্রছাত্রী উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।এরুপ অসংক্ষ বৈষম্য বিদ্যমান। আমরা বাঙ্গালী..
জাতীয়করণ নিয়ে সংকট সারা দেশে| আমার দেশ

জাতীয়করণ নিয়ে সংকট সারা দেশে


যাঁদের লাঠিপেটায় বাবা মারা গেছেন, তাঁরা যত ক্ষমতাবান আর প্রভাবশালীই হোন না কেন, দেশের আইনের চেয়ে তাঁরা বড় নন। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’ কান্নায় ভেঙে পড়ে কথাগুলো বলছিলেন সামিহা আজাদ। তাঁর বাবা আবুল কালাম আজাদ ফুলবাড়িয়া কলেজের শিক্ষক। ওই কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনের একপর্যায়ে গত রোববার পুলিশের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় আহত হয়ে মারা গেছেন তিনি।

জাতীয়করণ নিয়ে এই সংকট শুধু ফুলবাড়িয়া কলেজকে ঘিরে নয়। নীতিমালা ও নতুন নিয়োগবিধি ছাড়াই একসঙ্গে দেশের তিন শতাধিক বেসরকারি কলেজ জাতীয়করণ করতে গিয়ে এই বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঘোষিত মানদণ্ড না থাকায় ভালো ও পুরোনো কলেজ বাদ দিয়ে যেনতেন বেশ কিছু কলেজ জাতীয়করণের জন্য তালিকাভুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন হচ্ছে। পাবনার সুজানগরে গত সোমবার একটি কলেজকে জাতীয়করণের দাবিতে হরতালও পালন করেছেন ওই কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ইতিমধ্যে জাতীয়করণ হওয়া এবং প্রক্রিয়াধীন কলেজগুলোর বিরাটসংখ্যক শিক্ষককে বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে আরেক ধরনের জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা ঘোষণা দিয়েছেন, এসব শিক্ষকের বিসিএস ক্যাডারে আত্তীকরণের বিষয়টি তাঁরা মানবেন না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, আগে কলেজ জাতীয়করণ হওয়ার আগে সেগুলো পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠাত অধিদপ্তর। সেটা আবার যাচাই-বাছাই করে দেখা হতো। কিন্তু এবার পরিদর্শন প্রতিবেদন ছাড়াই শিক্ষা মন্ত্রণালয় যেসব উপজেলায় কোনো সরকারি কলেজ নেই, সেসব উপজেলার কয়েকটি করে কলেজের নাম প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠায়। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সেখান থেকে জাতীয়করণের জন্য কলেজগুলোর নাম চূড়ান্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়। এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু জায়গায় ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব কাজ করেছে বলে অভিযোগ আছে।
.মাউশির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছিল, কলেজ জাতীয়করণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে। এর ভিত্তিতে মাউশি একটি নীতিমালার খসড়াও করে দিয়েছিল। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় কী করেছে, সেটা আর তিনি জানেন না। গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করা হলে দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, নীতিমালা হলে তো সবাই দেখত ও জানত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের কাজে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, যেসব উপজেলায় কোনো সরকারি কলেজ নেই, সেসব উপজেলার সম্ভাব্য কিছু কলেজের নাম মাউশির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। পরে সেগুলোই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। তবে নীতিমালা আগেও ছিল না। এ বিষয়ে মাউশির একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আগে জাতীয়করণ হলেও তখন দু-একটি ভালো ও বড় কলেজকে জাতীয়করণ করা হয়েছে। এর ফলে সমস্যা হয়নি। কিন্তু এবার যেনতেন কিছু কলেজ তালিকায় ঢুকে যাওয়ায় সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ বিতর্কিত হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গত সোমবার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব উপজেলায় সরকারি স্কুল ও কলেজ নেই, সেখানে একটি করে স্কুল-কলেজ সরকারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ জন্য এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফাইল পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির সূত্র জানায়, ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩৮টি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৫ সালে পাঁচটি ও চলতি বছর ১২টি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়। ওগুলো বাদে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক তালিকায় ১৯৯টি এবং আরেক তালিকায় ২৩টি বেসরকারি কলেজ জাতীয়করণের ব্যবস্থা নিতে তালিকাভুক্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সব মিলিয়ে ৩১৩টি উপজেলায় একটি করে কলেজ জাতীয়করণ করা হবে। বর্তমানে সরকারি কলেজ ৩২৭টি। এগুলো চূড়ান্ত হলে মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ছয় শতাধিক। ইতিমধ্যে দুই দফায় দেওয়া তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কুষ্টিয়া, মাগুরা, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ, দিনাজপুরসহ কয়েকটি জেলার কিছু উপজেলায় বড় ও পুরোনো কলেজ বাদ দিয়ে যেনতেন কলেজ জাতীয়করণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো কলেজ আছে যেগুলোতে মাত্র দু-একজন পরীক্ষা দিয়ে কখনো সবাই ফেল কিংবা কখনো একজন পাস করেছেন। আবার কোনো কোনো কলেজ এমপিওভুক্তই হয়নি, তারপরও সেগুলোকে জাতীয়করণ করা হচ্ছে। এ নিয়ে এর আগে প্রথম আলোসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ডিগ্রি কলেজ বাদ দিয়ে উপজেলা থেকে দুই কিলোমিটার দূরের আরেকটি কলেজ জাতীয়করণ করা হচ্ছে। যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীন এই কলেজ থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় চারজন পরীক্ষা দিলেও কেউ পাস করেননি।

১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজ থেকে ২০১৫ সালে একজন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন। জাতীয়করণের তালিকায় থাকা মাগুরার মহম্মদপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান কলেজ এমপিওভুক্তই হয়নি। অথচ এই উপজেলায় ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত আমিনুর রহমান কলেজে শিক্ষার্থী ১ হাজার ৪০০। কিন্তু কলেজটি জাতীয়করণের তালিকায় নেই। সিরাজগঞ্জের তাড়াশেও এমপিওভুক্ত নয় এমন একটি কলেজকে জাতীয়করণের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। বাদ পড়েছে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত তাড়াশ ডিগ্রি কলেজ, যেখানে শিক্ষার্থী প্রায় দুই হাজার। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজকে বাদ দিয়ে নন-এমপিওভুক্ত সাইফুর রহমান কলেজ জাতীয়করণ করা হচ্ছে। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত সরিষাবাড়ী কলেজকে বাদ দিয়ে নতুন একটি কলেজকে জাতীয়করণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক বিবেচনাসহ কোথাও কোথাও স্থানীয় সাংসদ বা ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবে যেনতেন কিছু কলেজ জাতীয়করণের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অর্থের লেনদেন হওয়ারও অভিযোগ আছে। এর প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছে এবং হচ্ছে। পাবনাসহ কোথাও কোথাও হরতাল হয়েছে।
সর্বশেষ গত রোববার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া কলেজকে জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ওই কলেজের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আন্দোলনের মুখে টাঙ্গাইলসহ দু-একটি এলাকায় কলেজ পরিবর্তনও করা হয়েছে। মাউশির সাবেক মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুনও মনে করেন, কোনো কোনো জায়গায় স্থানীয় সাংসদের প্রভাবে বড় কলেজ বাদ পড়েছে। তবে তিনি মনে করেন, সরকারি হলে শিক্ষকেরা যেহেতু সরকারি হয়ে বেশি লাভবান হবেন, সে জন্য কোথাও কোথাও তাঁরা আন্দোলনকে উসকে দিচ্ছেন। সর্বশেষ গত রোববার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া কলেজে সহিংস ঘটনার পর বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়সহ অনেককেই নাড়া দেয়। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত ফুলবাড়িয়া কলেজে শিক্ষার্থী ৫ হাজার ৩০০। এখানে সাতটি বিষয়ে স্নাতকও (সম্মান) পড়ানো হয়। সেটিকে বাদ দিয়ে তুলনামূলকভাবে নতুন একটি উচ্চমাধ্যমিক কলেজকে জাতীয়করণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় সাংসদ মোসলেম উদ্দিনের প্রভাবেই বড় কলেজটি বাদ দেওয়া হয়েছে। অবশ্য সাংসদ গত রোববার এই অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে তিনি উপজেলা সদরের তিনটি কলেজের নামের তালিকা দিয়েছিলেন, সেখান থেকে সরকার একটিকে তালিকাভুক্ত করেছে।
ঘটনার পর গত সোমবার মাউশির ময়মনসিংহ অঞ্চলের পরিচালক মো. আবদুল মোতালেব মাউশিতে পাঠানো প্রতিবেদনে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলমান থাকলেও স্থানীয় সাংসদসহ জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়নি।
প্রবীণ শিক্ষকনেতা কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, নীতিমালা না থাকার কারণেই অপরিকল্পিতভাবে কলেজ জাতীয়করণ করতে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য প্রকাশ্য ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করতে হবে। প্রকাশ্য নীতিমালা থাকলে বোঝা যেত কোন কলেজটি জাতীয়করণের জন্য যোগ্য।

শিক্ষকদের নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির আশঙ্কা: বিদ্যমান বিধিমালা বাস্তবায়ন হলে জাতীয়করণের অপেক্ষায় থাকা কলেজগুলোর প্রায় আট হাজার শিক্ষক বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হবেন। এ জন্য এই প্রক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) অধীনে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ১৫-২০ বছর ধরে বেসরকারি কলেজগুলোতে কীভাবে ও কারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন, সেটা কমবেশি সবাই জানেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের টাকা দিয়ে বা স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। এটা সরকারও স্বীকার করে। এ জন্য সম্প্রতি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ রকম বাস্তবতায় ওই সব কলেজের প্রায় আট হাজার শিক্ষককে বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা হলে যাঁরা বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাকরি করছেন, তাঁদের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না। এ বিষয়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি ঘোষণা দিয়েছে, জাতীয়করণ হওয়া কলেজশিক্ষকদের বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি তাঁরা মানবেন না। তাঁদের দাবি, এসব শিক্ষককে নন-ক্যাডারে রেখে চাকরি শুধু জাতীয়করণ হওয়া কলেজগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সমিতির মহাসচিব শাহেদুল খবীর বলেন, আত্তীকরণ হওয়া শিক্ষকদের চাকরি আলাদা রাখতে হবে, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তবে জাতীয়করণ হওয়া কলেজশিক্ষকেরা বলছেন, ‘জনস্বার্থে’ তাঁদের কলেজকে জাতীয়করণ করছে সরকার। সুতরাং জাতীয়করণ হওয়ার পর তাঁদেরও বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এদিকে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক সমিতির কয়েক জন নেতা বলেন, দেশে উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষে সরকার ১৯৯৩ সাল থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত বিভিন্ন বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু করেন কিন্তু অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের আজও এমপিও ভুক্ত করেনি। তারা আন্দোলন করেও দাবী আদায় করতে পারিনি তাই রিট করেছে। আজ তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।তারা বলেন শিক্ষক হত্যার বিচার চাই। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, সব শিক্ষকের মর্যাদা যেন রক্ষা হয়, তা বিবেচনা করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


1 টি মন্তব্য: