বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০১৭
‘এলপি গ্যাস অপারেশনাল লাইসেন্সিং নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার’
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম(এলপি)গ্যাসের নিরাপদ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং পরিচালনার জন্য ‘এলপি গ্যাস অপারেশনাল লাইসেন্সিং নীতিমালা, ২০১৭’ প্রণয়ন করেছে সরকার।
গত ২৯ জানুয়ারি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই নীতিমালার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে এ ধরণের কোনো নীতিমালা না থাকায় এলপি গ্যাস ব্যবহারে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে।
এই নীতিমালা হওয়ায় এখন সরকার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনাক্রমে এলপি গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের উপর ভিত্তি করে গ্যাসের খুচরা মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতি প্রণয়ন করবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপি গ্যাস) বহুমুখী ব্যবহার সম্প্রসারণকল্পে এলপি গ্যাস আমদানি, উৎপাদন, মজুদ, পরিবহন, টার্মিনাল স্থাপন, স্বয়ংক্রিয় যানের জ্বালানি (অটোগ্যাস) হিসেবে এলপি গ্যাস বিতরণ স্টেশন (ডিসপেন্সিং/রিফুয়েলিং স্টেশন) স্থাপন, স্বয়ংক্রিয় যানের ইঞ্জিনকে এলপি গ্যাস দ্বারা চালানোর জন্য রূপান্তর কারখানা স্থাপন, বটলিং প্ল্যান্ট নির্মাণ এবং এলপি গ্যাস বিতরণ ও বিপণনের লক্ষ্যে মাস্টার ফ্রাঞ্চাইজি বা ফ্রাঞ্চাইজি বা এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটার বা ডিস্ট্রিবিউটার ও ডিলার নিয়োগের সাথে দেশের অর্থনীতি, ভোক্তা স্বার্থ ও অধিকার, পরিবহন ব্যবস্থা, সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয় ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
তাই এ গ্যাসের নিরাপদ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা সম্প্রসারণ ও পরিচালনায় এলপি গ্যাস আমদানি, উৎপাদন, মজুদ, পরিবহন, টার্মিনাল স্থাপন, অটোগ্যাস জ্বালানি হিসেবে এলপি গ্যাস বিতরণ স্টেশন (ডিসপেন্সিং/রিফুয়েলিং স্টেশন) স্থাপন, স্বয়ংক্রিয় যানের ইঞ্জিনকে এলপি গ্যাস দ্বারা চালানোর জন্য রূপান্তর কারখানা স্থাপন, বটলিং প্ল্যান্ট নির্মাণসহ এলপি গ্যাস বিতরণ ও বিপণনের লক্ষ্যে মাস্টার ফ্রাঞ্চাইজি বা ফ্রাঞ্চাইজি বা এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটার বা ডিস্ট্রিবিউটার ও ডিলার নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, আর্থিক সক্ষমতা, এলপি গ্যাসের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য স্পেসিফিকেশন নির্ধারণ, বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সম্পর্ক, দায়িত্ব ও সম্পাদিত চুক্তি ইত্যাদি বিষয়সমূহ সুনির্দিষ্ট করা সমীচীন বিধায় এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো।
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপি গ্যাস) আমদানি, উৎপাদন, মজুদ, পরিবহন, টার্মিনাল স্থাপন, বটলিং প্ল্যান্ট স্থাপন এবং স্বয়ংক্রিয় যানের জ্বালানি (অটোগ্যাস) হিসেবে এলপি গ্যাস বিতরণ স্টেশন (ডিসপেন্সিং/রিফুয়েলিং স্টেশন) স্থাপন, স্বয়ংক্রিয় যানের ইঞ্জিনকে এলপি গ্যাস দ্বারা চালানোর জন্য রূপান্তর কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে এলপি গ্যাস বিতরণ ও বিপণনের কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে ‘এলপি গ্যাস অপারেটর’ হিসেবে অভিহিত করা হবে।
টার্মিনাল, প্ল্যান্ট এবং অন্যান্য স্থাপনাসমূহ নির্মাণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড স্টেটিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই), বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) এর অনুমতিসহ সরকারের বিধিবদ্ধ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা দপ্তর বা অধিদপ্তর বা পরিদপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন বা লাইসেন্স বা ছাড়পত্র বা অনাপত্তিপত্র এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন (বিইআরসি) এর লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।
এলপি গ্যাস অপারেটর কর্তৃক নিয়োগকৃত মাস্টার ফ্রাঞ্চাইজি বা ফ্রাঞ্চাইজি বা এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটার বা ডিস্ট্রিবিউটার ও ডিলার ব্যতীত অন্য কেউ গৃহস্থালি, অটোগ্যাস, বাণিজ্যিক ও শিল্প কাজে ব্যবহারের জন্য এলপি গ্যাস বিতরণ ও বিপণন করতে পারবে না।
তবে শর্ত থাকে যে, মাস্টার ফ্রাঞ্চাইজি বা ফ্রাঞ্চাইজি বা একক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটার বা ডিস্ট্রিবিউটার ও ডিলারগণকে বিস্ফোরক পরিদপ্তর হতে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স গ্রহণপূর্বক এলপি গ্যাস অপারেটরদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে ফ্রাঞ্চাইজ বা ডিস্ট্রিবিউটার ও ডিলারশিপ গ্রহণপূর্বক এলপি গ্যাস বিতরণ ও বিপণন করতে হবে।
সরকারের পূর্বানুমোদন এবং এলপি গ্যাস অপারেটরের লাইসেন্স ব্যতিত কোন প্রতিষ্ঠান এলপি গ্যাস অপারেটর হিসেবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না।
যে সব প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক অনুমোদনের ভিত্তিতে এলপি গ্যাসের ব্যবসা পরিচালনা করছে এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে, সে সকল প্রতিষ্ঠানকে এ নীতিমালা প্রকাশের তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে এবং সরকার নির্ধারিত চুক্তির ফরম্যাট অনুযায়ী বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে উক্ত ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে।
বোতলজাত এলপি গ্যাস বা বাল্ক আকারে এলপি গ্যাস রপ্তানির জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ হতে অনাপত্তি এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
এলপি গ্যাস অপারেটরের ব্যবসা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে সর্বমোট ন্যূনতম পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার এলপি গ্যাস মজুদ ট্যাংক নির্মাণ করতে হবে এবং বাল্ক এলপি গ্যাস পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক এলপি গ্যাস রোড ট্যাংকার অথবা নৌপথে চালিত এলপি গ্যাস পরিবহনযান থাকতে হবে।
এক এলপি গ্যাস অপারেটর অপর এলপি গ্যাস অপারেটরের সিলিন্ডার রিফিল করতে পারবে না। যদি ব্যত্যয় ঘটে সে ক্ষেত্রে অপারেটর, তৎকর্তৃক নিয়োগকৃত মাস্টার ফ্রাঞ্চাইজি বা ফ্রাঞ্চাইজি বা এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটার বা ডিস্ট্রিবিউটার ও ডিলারগণের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে সরকার।
এ সংক্রান্ত অন্যান্য নীতিমালায় যাই থাকুক না কেন এ নীতিমালা প্রাধান্য পাবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
- See more at: http://bangla.energynewsbd.com/details.php?id=544#sthash.GYISyDw7.dpuf
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন